প্রতিবেদকঃ আছিফ রহমান শাহীন (চট্রগ্রাম)
১৬ নভেম্বর ছিল মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ২০১৯ ত্রি বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন পুরো মিরসরাই সেজে ছিল সাজ সাজ রবে। চারিদিকে উৎসবের আমেজ ছিল। সাথে ছিল খাওয়া দাওয়ার আয়োজনও মুলk ২০১৩ সালে মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের শেষ কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছিল। তারপর ২০১৯ সালের এই কাউন্সিল। মিরসরাই বাসি তথা তৃণমূল আওয়ামীলীগেরেও অনেক বেশী আগ্রহ ছিল এই সম্মেলনকে ঘিরে।
কিন্তু বিধি বাম, সে সম্মেলনের সকল আগ্রহ ছাপিয়ে এক মলিন নীরব মুখের ছবি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। তোলপাড় হতে থাকে ফেইসবুক দুনিয়া। সবাই তখন এই ফেইসবুকে লিখতে থাকে; হায় তৃণমূল! হায় আওয়ামী লীগ! কার আওয়ামী লীগ! কাদের ত্যাগের আওয়ামী লীগ কারা ভোগ করছেন! সবাই লিখেন সবার মনের ক্ষোভ। এই নিরব মুখ সবার দিকেই চেয়েছিল। মঞ্চ থেকে মাঠ।উনার পকেটে ছিল না কাউন্সিল কার্ড বা ডেলিগটস কার্ড। অনেকে লিখেছেন সেই সম্মেলনের বিরিয়ানিও নাকি উনার কপালে জুটে নাই। তবে এই সবটুকু আলোচনার সুযোগে উঠে আসে আরেকজন সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীর নাম যিনি নীরবে নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নির্যাতিত ত্যাগী আর অবহেলিত দুঃসময়ের সাবেক নেতা কর্মীদের জন্য। তিনি একজন তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিট। নিয়াজ মোর্শেদ এলিট কথা বলেন এই প্রতিবেদকের সাথে। তিনি বলেন, দেখুন আমি একজন সমাজ সেবক হিসেবে মিরসরাইতে কাজ করছি ২০১২ সাল থেকে। মিরসরাইবাসীর সাথে দীর্ঘ দিন কাজ করতে করতে আমি মোতাহার হোসেন রানা ভাইসহ আরোও কিছু আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারিদের খবর পাই যারা সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বা জেলা ছাত্রলীগের কিংবা উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ দ্বায়িত্বে ছিলেন। এদের সবাই আওয়ামী লীগের জন্য এমন সব ত্যাগ স্বীকার করেছেন যা বর্তমানে খুবিই বিরল।
কিন্তু তাদের তেমন কোন প্রাপ্তি নেই দল থেকে। তবে প্রাপ্তি থেকেও বড় বিষয় মূল্যায়ন নেই কারোই।এটাই এদের মনে অনেক বড় কষ্টের বিষয়। জনাব এলিট বলেন, গত জুনের ১৫তারিখ ২০১৮ সালে রমজানের ঈদে আমি এই সকল ত্যাগী নেতাদের লিস্ট ধরে ধরে ঈদের জন্য আমার পক্ষথেকে সামান্য ঈদ উপহার তুলে দিই। সাথে কিছু ঈদিও ছিল। ঈদের দিন যাতে উনারা খুশীতে ঈদ উৎযাপন করতে পারেন। উনাদের এই সামান্য টুকু করতে পেরে আমিও অনেক তৃপ্তি পেয়েছিলাম। তবে এইখানে না বললে নয়, আমার সেই সামান্য কাজ টুকু তখন সহ্য হয়নি ততকালিন মন্ত্রী মহোদয়ের। উনি আমার সেই ঈদ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া কর্মীদের হয়রানি করতে থাকেন। এমনি একজন ঈদের আনন্দ থেকেও বঞ্চিত হয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আমার কাছে আশ্রয় নেন। তাই আমাদের সেই ত্যাগী আওয়ামী লীগের সাবেক নেতাকর্মীদের সাহায্য সহযোগীতার অংশীদারি হতে স্থানীয় কর্মীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। কারণ সাহায্যের পরক্ষনে নিজ দল আওয়ামী লীগ থেকেই তাদের উপর হামলা-মামলা কিংবা মাদক কারবারি বানানো হয়।
কিছু দিন আগে ২০১৯ সালের মে মাসে আবার খবর আসে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মোতাহার হোসেন রানা ভাই ভালো নেই।নিদারুণ অর্থ কষ্ট নিয়ে দিন যাপন করছেন। চিকিৎসা নিতে পারছেন না। তখনি আমি নিজ উদ্যোগে কালের কণ্ঠ শুভ সংঘ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি আছিফ রহমান শাহীনকে রানা ভাইয়ের বাড়ী পাঠাই। রানা ভাইয়ের সাথে আমি কথা বলি। উনাকে সর্বোচ্চ সাহায্যের আশ্বাস দেই। তারই ধারাবাহিকতায় আমি কেদ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলি। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমরা রানা ভাইকে দিয়ে একটি আবেদন করাই। সে আবেদনের কাজ চলছে। আাশাকরি খুব তাড়াতাড়ি একটা সু-খবর পাওয়া যাবে। আর আপনাদের ধন্যবাদ জানাই রানা ভাই আবার আলোচিত হওয়ার সুযোগে আমার এলাকার প্রচেষ্টায় আপনারাও সাহায্যের হাত প্রসারিত করবেন। যাতে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা হিসাবে নয় মোতাহার হোসেন রানা সমাজের একজন আইকন হিসাবে বেঁচে থাকতে পারেন।
প্রসঙ্গত জনাব মোতাহার হোসেন রানা ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগ নেতা ও সাবেক কবি জসীম উদ্দীন হলের সভাপতি। ১৯৯০ সালের সামরিক জান্তার সময়ে তিনি বর্তমান আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সাথে ৬৪ জেলা ঘুরেছেন, সাথে সাথে ছিলেন তিনি। উনার অনল বর্ষী বক্তৃতা অনেকে তখন মন্ত্রের মত শুনতেন। তিনি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালের ছাত্র ছিলেন। কিন্তু উদিয়মান এই নেতা মিরসরাইতে এক অজানা রোড় এক্সিডেন্টের স্বীকার হয়ে পংঙ্গু হয়ে যান। সেই এক্সিডেন্টে উনার শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংঙ্গ হানি ঘটে।এই খবর ততকালিন আওয়ামী লীগ সভাপতি নেত্রী শেখ হাসিনার কানে পৌঁছালে নেত্রী রানাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর নির্দেশ দেন। কিন্তু রানার কপাল খারাপ সেই ভাগ্যি রানার হয়নি। হলে হয়তো রানা সুস্থ হয়ে আবার রাজপথের সারথি হয়ে থাকতো। তারপর আবার রানা কিছুটা সুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে গেলে নেত্রী মোতাহার হোসেন রানা ভাইকে একটি ভাতার ব্যবস্থা করে দেন। তবে সেই ভাতা আজকের দিনে মোতাহার হোসেন রানার এক কলেজ পঠুয়া ছাত্রসহ ৭ জনের পরিবারের ভরণ পোষণ করতে নিত্যদিন হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর তাই মোতাহার হোসেন রানা ভাই তাকিয়ে আছেন নিয়াজ মোর্শেদ এলিট বা মিডিয়ার দিকে।
যেভাবেই হোক যাতে উনার বতর্মান অবস্থার কথা বিবেচনা করে জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উনাকে এক কালিন সাহায্য করবেন যা দিয়ে উনি একটি ব্যাবসা বা দোকান দিতে ইচ্ছুক।