প্রতিবেদকঃ শেখ হেদায়েতুল্লাহ (খুলনা)
খোলা চিঠি
সোমা মুৎসুদ্দি
“নিঃশব্দ”
তোমায় ভেবে আজ সারাটাদিন আমার কোনো কাজই হলো না।জানালার এপাশে বসে ভাবছি।
আচ্ছা! ওই হিমালয়টা কি আমার মনের খবর জানে? তোমার চাকরি দেশ রক্ষার। দেশের শেষ সীমানায়। কাজেই এটা ভেবেই শান্তি পাই মনে। যদি সম্ভব হয়, পূজোয় ছুটি পেলেই চলে এসো বাড়িতে। তোমার ঘরটা আগের মতোই সাজিয়ে রেখেছি। তাকে সাজানো তোমার লেখা কবিতার বই ও তোমার প্রিয় কবিদের বই। ও পাড়ার মাসিমা। সময় পেলে প্রতিদিন গরুর টাটকা দুধ দিয়ে যায়। এখনো আগের মতোই দই জমিয়ে রাখি। আর ভাবি, এই তো তুমি এলে! কিন্তু ভ্রান্তি। একা একা আর কতোটুকু খাওয়া যায় বলো!
ওপাড়ার বউ-দিদিমনিরা এলে তাদেরই খেতে দিই। জেলে পাড়ার সুনির্মল মাঝে মাঝে তাজা মাছ দিয়ে যায়। নিতে চাই না। তবুও জোর করে দিয়ে যায়। আর বলে,”টাকার জন্য ভাববেন না দিদি, ওসব দাদাবাবু আসলে হিসেব হবে ক্ষন”।
আমিও হিসেব নিয়ে বসি, জীবন খাতা খুলে। কবে তুমি আসবে! কবে পাতে তুলে দেবো টাটকা মাছের কালিয়া। মাথার মুড়িঘন্ট আর বাড়িতে পাতা দই। এবার আসলে কাঞ্চনজঙ্ঘা পাহাড় দেখতে যাবো। তুমি তো জানোই, পাহাড় আমি খুব ভালোবাসি। সবুজ পাহাড়।
মনে আছে? এই পাহাড়েই তোমার-আমার প্রথম পরিচয়। কোনো এক শীতের বিকেলে, আমার পরনে ছিলো হালকা নীল রঙের শাড়ি। গায়ে একটি চাদর জড়ানো। একা একা হাটছিলাম। তুমিও এসেছিল, ঠিক আমার পথে। বন্ধু নিয়ে বেড়াতে।
হঠাৎ আমায় দেখে থমকে গেলে। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলে, নাম ধাম পরিচয় জানতেই, আমি হয়ে গেলাম তোমার বাবার বন্ধুর মেয়ে। তারপর বাকিটা ইতিহাস। এটা তোমার অজানা নয়। চলে এসো নিঃশব্দ।
অপেক্ষায় রইলাম। পূজোর ছুটিতে তোমার সাথে কাঞ্চন জঙ্ঘা পাহাড় দেখতে যাবো। নীল রঙের শাড়ি পড়ে, বিকেল বেলা।
ইতি তোমারই অমানিশা
এফএম নিউজ…
আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী