সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রানার দ্বায়িত্ব নিলেন এলিট

0
271
প্রতিবেদকঃ আছিফ রহমান শাহীন (চট্রগ্রাম)
(দ্বিতীয় প্রতিবেদন)
কিছু দিন আগে ২০১৯ সালে মে মাসে আবার খবর আসে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্র লীগ নেতা মোতাহার হোসেন রানা ভাই ভালো নেই। নিদারুণ অর্থ কষ্ট নিয়ে দিন যাপন করছেন। চিকিৎসা নিতে পারছেন না। তখনি আমি নিজ উদ্যোগে কালের কণ্ঠ শুভ সংঘ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি আছিফ রহমান শাহীনকে মোতাহার হোসেন রানা ভাইয়ের বাড়ীতে পাঠাই। রানা ভাই এর সাথে আমি মোবাইলে কথা বলি।উনাকে সর্বোচ্চ সাহায্যের আশ্বাস দিই। আর আপনাদের ধন্যবাদ জানাই রানা ভাই আবার আলোচিত হওয়ার সুযোগ আমার একার প্রচেষ্টায় আপনারাও সাহায্যের হাত প্রসারিত করেছেন। তিনি আরোও বলেন রানা ভাই কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন।দেশে বিদেশে আজকে সবার রানা ভাই এর জন্য মন খারাপ। সবাই ব্যতীত মর্মাহত। আওয়ামী লীগ নেতা নিয়াজ মোর্শেদ এলিট বলেন মোতাহার হোসেন রানা ভাই এর দ্বায়িত্ব আজ থেকে আমি নিলাম। উনার সন্তানদের পড়ালেখার খরচ, উনার চিকিৎসা খরচ সহ আমি উনাকে প্রতি মাসে একটি সম্মানী দিবো। যা উনার নিজের ব্যক্তিগত হিসাবে জমা হবে। আর মোতাহার হোসেন রানা ভাই এর বাড়ীটি আমি সংস্কার করে দিবো যাতে উনার আগামী দিনে বাসস্থান এর সমস্যাটা সমাধান হয়। আমি উনাকে একটি পাকা বাড়ী করে দিবো। এছাড়া ও মোতাহার হোসেন রানা ভাই এর যখন যা লাগবে আমি তার ব্যবস্থা করবো ইনশাল্লাহ।
প্রসঙ্গত জনাব মোতাহার হোসেন রানা ছিলেন সাবেক ছাত্র লীগ কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী মুঈনু- ইকবাল পরিষদের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবি জসীম উদ্দীন হলের বাদশা-মোক্তার প্যানেলের নাট্য ও সামাজিক অনুষ্ঠান বিষয়ক সম্পাদক এবং হল শাখা ছাত্র লীগ সভাপতি। ১৯৯০ সালে সামরিক জান্তার সময়ে তিনি বর্তমান আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর সাথে ৬৪ জেলা ছাত্রনেতা হিসাবে ঘুরেছেন। উনার অনল বর্ষী বক্তৃতা অনেকে তখন মন্ত্রের মত মুগ্ধ হয়ে শুনতেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা নিয়মিত ছাত্র ছিলেন এবং ঐতিহাসিক মধুর ক্যান্টিনে ছাত্র নেতাদের সবার প্রিয় মুখ ছিলেন। কিন্তু নিয়তির কি নির্মম পরিহাস উদিয়মান তরুন ছাত্রনেতা মোতাহার হোসেন রানা মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে ১৯৯২ সালের বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে বি. এন. পি. – জামাত সন্ত্রাসী কর্তৃক মারাত্মক হামলার শিকার হন। সেই হামলায় মোতাহার হোসেন রানার মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেতলানো ছিল। মৃত ভেবে ঘাতকরা রানাকে ফেলে চলে যায়। সে হামলায় রানার অনেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হানি ঘটে। মোতাহার হোসেন রানা বিকলাঙ্গ হয়ে যান।
এই খবর ততকালিন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কানে পৌঁছালে নেত্রী রানাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানোর নির্দেশ দেন।কিন্তু রানার কপাল খারাপ সেই ভাগ্যি রানার হয়নি। অজানা কারনে রানার উন্নত চিকিৎসায় বিদেশ যাওয়া হয়নি। চিকিৎসা নেন ঢাকার তৎকালীন পিজি হসপিটাল বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ডাক্তার জানান মোতাহার হোসেন রানার যা ক্ষতি হওয়ার ইতিমধ্যে হয়ে গেছে।
রানার সময় মতো যথাযথ চিকিৎসা হয়নি, হলে হয়তো রানা সুস্থ হয়ে আবার রাজপথের লড়াকু সারথি হয়ে শেখ হাসিনার বিশ্বস্থ ভ্যানগার্ড এর দ্বায়িত্বে থাকতেন। তারপর কিছুটা সুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে গেলে দেশরত্ন – জননেত্রী শেখ হাসিনা মোতাহার হোসেন রানাকে প্রথমে ২০০৪ সালে ৯ই জুন ধানমন্ডির সভাপতির কার্যালয়ে তাঁহার প্রতিনিধি হিসাবে থাকা -খাওয়া ফ্রি করে মাসিক বেতন ধার্যে রাখেন এবং ২০০৮ সালের ২৮ শে ডিসেম্বর নির্বাচনে বিশাল বিজয় নিয়ে জয়যুক্ত হয়ে সরকার গঠন করে ৫ই এপ্রিল ২০০৯ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাটলার পদে ফ্রিভিলিজ কর্মচারী হিসাবে চাকুরীতে রাখেন। তবে সেই বেতনে আজকের দিনে মোতাহার হোসেন রানার ৮ জনের পরিবারের ভরণ পোষণের খরচ চালাতে নিত্যদিন হিমশিম খেতে হচ্ছে।তার উপর ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার খরচ বহন সহ নিজের চিকিৎসা চালিয়ে দুই বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করাটা মোতাহার হোসেন রানার জন্য দুঃসাধ্য ব্যপারে দাঁড়িয়েছে। আজকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিট এর ঘোষণার পর এই প্রতিবেদক এর সাথে জনাব নিয়াজ মোর্শেদ এলিট ও মোতাহার হোসেন রানার কথা হয়। জনাব মোতাহার হোসেন রানা আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানান আওয়ামী লীগ নেতা মিরসরাই এর কৃতী সন্তান নিয়াজ মোর্শেদ এলিট এর প্রতি।
মোতাহার হোসেন রানা এই প্রতিবেদককে বলেন নিয়াজ মোর্শেদ এলিট আমাকে ফোন করেছে সে আমার এলাকার সাবেক ছাত্র লীগের ছোট ভাই।সে আমার সাথে দেখা করেছে।সে আমাকে আশ্বস্ত করেছে সে আমার দ্বায়িত্ব নিয়েছে।সে প্রতি মাসে আমাকে সম্মানী দিবে আর আমার বাড়ী নির্মাণ করে দিবে আর আমার যখন যা প্রয়োজন সে তা পূরণ করবে। সে আমার চিকিৎসার ও ব্যবস্থা করে দিবে।জনাব রানা বলেন এলিট অনেক ভালো মানুষ। সে তরুণ উদিমান আওয়ামী লীগ নেতা। আমি মন থেকে এলিট এর জন্য আল্লাহ্‌তালার কাছে দোয়া করি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে এলিট এর মত মুজিব সেনার আজকের দিনে বড্ড দরকার। এলিট আমার মত অসহায় নেতার জন্য যে সম্মান দেখিয়েছে আমি আজীবন তার প্রতি ঋণী থাকলাম। তার জন্য আমার মন থেকে দোয়া আর ভালোবাসা থাকলো। আর ফেইসবুকে যারা আমার জন্য পোষ্ট করেছেন, আমাকে কল দিয়েছেন,আমার জন্য সহানুভূতি দেখিয়েছেন বিশেষ করে আমার ছাত্র লীগের সাবেক আর বর্তমান নেতা কর্মী সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা আর ধন্যবাদ জানাই। সবশেষে জনাব মোতাহার হোসেন রানা বলেন আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ।
যেহেতু আমার ছোট ভাই নিয়াজ মোর্শেদ এলিট আমার দ্বায়িত্ব নিয়েছে। এখন আমার বতর্মান অবস্থার কথা বিবেচনা করে জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমাকে এক কালিন সাহায্য করেন তবে তা দিয়ে আমার ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের আগামী দিনের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত হয়। আমি মহান রাব্বুল আলামিনের নিকট শোকরিয়া জানাই।

এফএম নিউজ…

আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী