খুলনা আওয়ামী লীগ জেলা ও মহানগর সম্মেলন: সমঝোতায় কমিটি?

0
419

প্রতিবেদকঃ শেখ হেদায়েতুল্লাহ, খুলনা

আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা ও মহানগর শাখার ত্রি-বার্র্ষিক সম্মেলন আগামী ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার। বাকি রয়েছে মাত্র ৭দিন। সম্মেলনকে সামনে রেখে খুলনায় বইছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের নেতা- কর্মীদের মাঝে উৎসাহের আমেজ। সম্মেলন সফল করতে প্রতিদিনই জেলা ও মহানগরে আলোচনা সভা , বিশেষ প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চলছে নেতাদের সর্মথনে প্যানা বোর্ড, ফেস্টুন ও তোরণ নির্মানের মাধ্যমে পদ পেতে প্রচার- প্রচারনা। মহানগর শাখার শীর্ষ পদটিতে একক ব্যক্তির নাম শোনা গেলেও জেলা শাখার একাধিক ব্যক্তির নাম আলোচনায় আসছে। এছাড়া সাধারন সম্পাদকের পদে জেলা ও মহানগর শাখায় একাধিক ব্যক্তি তৎপর। যদিও স্থানীয় নেতাদের সাতে আলাপকালে জানা যায় সব কিছুই নির্ভর করবে দলীয় হাইকমা্েন্ডর সিদ্ধান্তের উপর।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সভাপতি পদ নিয়ে আলোচনায় সেভাবে আগ্রহ দেখা না গেলেও সাধারণ সম্পাদক নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। দুই কমিটিতেই সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য একাধিক নেতা লবিং শুরু করেছেন। মাঠ পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত তাদের সক্রিয় দেখা যাচ্ছে।
২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর খুলনা মহানগর শাখার সম্মেলনে তালুকদার আবদুল খালেক সভাপতি ও মিজানুর রহমান মিজানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। মহানগর কমিটির এই শীর্ষ দুই নেতাই মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। কমিটির সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক এখন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত মেয়র। মহানগর শাখার সভাপতি পদে এখন পর্যন্ত একক প্রার্থী হিসেবে তালুকদার খালেকেরই নাম শোনা যাচ্ছে।
অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান নানা কারনে বিতর্কিত হয়ে পড়ায় গত সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পাননি। অনেকটা কোনঠাসা অবস্থায় ছিলেন তিনি তবে সাম্প্রতিক সময়ে তিনি যথেষ্ঠ সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। পদ ধরে রাখতে তিনি জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে আর যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন সদর থানা সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, আশরাফুল ইসলাম ও আবুল কালাম আজাদ কামাল,দৌলতপুর থানা সভাপতি সৈয়দ আলী প্রমুখ।
নগর সাধারন সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, দল যাকে পছন্দ করবে তিনি হবেন পরবর্তী নেতা। আমরা চাইছি সুষ্ঠু ও সুন্দর সম্মেলনের আয়োজন করতে। সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচিত হতে পারে অথবা দলীয় হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তে সমঝোতার মাধ্যমেও নেতা নির্বাচিত হতে পারে।
২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে শেখ হারুনুর রশিদ সভাপতি ও এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
জেলা শাখার সভাপতির পদে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা শেখ হারুনুর রশীদ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সভাপতি পদে তিনি এবারও নির্বাচিত হতে পারেন এমনটাই শোনা যাচ্ছে। তবে মহানগর শাখার সহ-সভাপতি ব্যবসায়ী সংগঠন খুলনা চেম্বার অব কর্মাস এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি কাজী আমিনুল হক জেলার রাজণীতিতে যুক্ত হচ্ছেন এমন খবরে কেউ কেউ মনে করছেন তিনি হয়তো সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন। এছাড়া ডুমুরিয়া উপজেলা শাখার সভাপতি সাবেক মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ সভাপতি পদে প্রার্থী হতে পারেন বা তিনি সভাপতি হচ্ছেন এমন আলোচনাও বর্তমানে ঘুরপাক খাচ্ছে। এছাড়া সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এম মুজিবুর রহমানও সভাপতি প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।
গত বছর ১৮ জুলাই সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা রশিদী সুজার মৃত্যু হলে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী। তিনি সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী। এছাড়া সাধারন সম্পাদক পদ প্রত্যাশী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে কামরুজ্জামান জামাল, আক্তারুজ্জামান বাবু (এমপি), ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক নেতা অসিত বরণ বিশ্বাসের নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়া বটিয়াঘাটা উপজেলা সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম খান সাধারন সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে পারেন। আশরাফুল আলম খানের ভাই আমীর এজাজ খান বিএনপি খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক।
আওয়ামী লীগ খুলনা জেলা সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, ‘ সম্মেলনের মাধ্যমেই নেতৃত্ব নির্ধারণ হবে। কে আসবে কে যাবে সেটি শুধু দলীয় প্রধান ভালো জানেন। নির্ধারিত সময় গঠনতন্ত্র মেনেই সম্মেলন করা হবে। তৃণমূলের চাহিদা ও কেন্দ্রের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নির্ধারিত হবে নেতা। আমরা চাচ্ছি সুন্দর একটি সম্মেলন উপহার দিতে।’ ইতোমধ্যে সম্মেলন প্রস্তুতির ৭৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।

এফএম নিউজ…আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী

বিজ্ঞাপন ও বার্তা বিভাগঃ 0183 11-06 108