থমকে গেছে সড়ক পরিবহন নতুন আইন বাস্তবায়ন

0
437

প্রতিবেদকঃ শেখ হেদায়েতুল্লাহ, খুলনা

  • নভেম্বরে চালকের লাইসেন্স পেতে আবেদন ৮ হাজার ৮০০
  • যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ১ হাজার ১১৩
  • ফিটনেসবিহীন যানবাহন ৪ হাজার ৩৩৬

নতুন একটি আইন বাস্তবায়নে তো একটু সময় লাগবে। হঠাৎ করে কারও উপরে তো আইন চাপিয়ে দেয়া যাবে না। আইন সম্পর্কে সকলকে সচেতন করতে হবে। তাদেরকে আইন মেনে চলার ব্যাপারে উৎসাহী করতে হবে। না হলে তাদের প্রশাসন অথবা কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারনা জন্মাবে। সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ের অবস্থা সর্ম্পকে এমনটাই বললেন সংশ্লিষ্টরা।
সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে নভেম্বর মাসের ১ তারিখ থেখে। কেটে গেছে ১ মাস। আইনটি বাস্তবায়ন শুরু করলে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ট্রাফিক বিভাগ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্টরা বিরোধের মুখে পড়ে। পরিবহন শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। এক পর্যায়ে সরকারের উচ্চমহল থেকে আইন বাস্তবায়নে শীতিলতা দেয়া হয়। সেভাবেই চলছে। ইতোমধ্যে খুলনা বিআরটিতে চালকের লাইসেন্স পেতে গত নভেম্বর মাসে অন লাইনে আবেদন পড়েছে ৮ হাজার ৮০০টি। মোটর সাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন মিলে রেজিস্টেশন পেতে আবেদন পড়েছে ১ হাজার ১১৩টি।
খুলনার সড়ক মহাসড়কগুলোতে ফিটনেস ও রেজিস্ট্রেশন বিহীন যানবাহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই সড়ক-মহাসড়কে ফিটনেস, রুট ট্যাক্স টোকেন ও রুট পারমিট ছাড়াই যানবাহনের মালিকরা চলাচল করেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সড়ক ও মহাসড়কে একাধিকবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়।
খুলনা বিআরটিএর তালিকাভুক্ত ৪ হাজার ৩৩৬টি যানবাহন মালিকদের কাগজপত্র হালনাগাদ করতে চিঠির মাধ্যমে তাগিদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক যানবাহন মালিকের চিঠি ফেরত আসায় এতে খুব বেশি সাড়া মেলেনি। ঠিকানা পরিবর্তন, মালিকের মৃত্যু, যানবাহনের দৃশ্যমান অবস্থান না থাকার কারণে এসব সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
খুলনা জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ইন্সপেক্টর মো: মিজানুর রহমান জানান নতুন আইন বাস্তবায়নের জন্য কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। অন্যান্য মাসের তুলনায় গত নভেম্বর মাসে ট্রাফিক আইনে মামলা ও জরিমানার পরিমাণ কম হয়েছে। তিনি বলেন উর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে মাঠ পর্যায়ে কাজ চলছে।
খুলনা বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মো. আবুল বাসার জানান, গত নভেম্বর মাসে অন লাইনে আবেদন পড়েছে ৮ হাজার ৮০০টি। মোটর সাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন মিলে রেজিস্টেশন পেতে আবেদন পড়েছে ১ হাজার ১১৩টি। তিনি জানান ৪ হাজারের মত যানবাহনের ফিটনেস, রুট ট্যাক্স টোকেন ও রুট পারমিটের কাগজপত্র নেই। এর মধ্যে বাস, ট্রাক, বেবি ট্যাক্সি ও পিকআপের সংখ্যা বেশি।
খুলনা রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজির মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এ্যান্ড অপরারেশন) মো: শরফুদ্দীন বলেন নভেম্বর মাসের ১ তারিক থেকে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন হয়েছে। আইন সম্পর্কে সকলকে সচেতন করতে রেঞ্জ পুলিশের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক সভা সেমিনার লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। মানুষ আইন সম্পর্কে জানতে পারলে তা বাস্তবায়নের জন্য সুবিধা হবে।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮,যা ১ নভেম্বর ২০১৯ থেকে কার্যকর হয়েছে, সেখানে ৭৫ ধারায় মোটরযান ফিটনেস সনদ ব্যতীত বা মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেস ব্যবহার করলে অনধিক ৬ মাসের দন্ড এবং অনধিক ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। এছাড়া ৭৬ ধারায় ট্যাক্স টোকেন ব্যতীত বা মেয়াদোত্তীর্ণ ট্যাক্স টোকেন ব্যবহার করলে অনধিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৭৭ ধারায় রুট পারমিট ব্যতীত পাবলিক প্লেসে পরিবহন ব্যবহার করলে অনধিক ৩ মাসের দন্ড ও অনধিক ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে। নতুন সড়ক পরিবহন আইনে বেশির ভাগ ধারার জরিমানা ১০ থেকে ৫০ গুণ বাড়ানো হয়েছে। আগে যেসব ধারায় এক মাস কারাদন্ডের বিধান ছিল, এখন তা ২ বছর পর্যন্ত হয়েছে। আইনের বেশির ভাগ ধারাতেই সর্বোচ্চ শাস্তি কত হবে তা আছে, সর্ব নিম্ন শাস্তির উল্লেখ নেই।
এফএম নিউজ…
আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী

বিজ্ঞাপন ও বার্তা বিভাগঃ 0183 11-06 108