প্রতিবেদকঃ বিনোদন প্রতিনিধি, বিপা চৌধুরী
তন্ত্র-মন্ত্র কিংবা যাদু টোনার বাইরে এসে যারা ম্যাজিককে বিজ্ঞান সম্মত আধুনিক শিল্পকলা মনে করেন শাহীন শাহ্ তাদের একজন। প্রকৃতির যাদু ভরা অপরূপ লীলাভূমি বরিশাল জেলায় জন্ম ও বেড়ে উঠা কৈশরের সহজাত চঞ্চলতা তাকে অনুপ্রাণিত করে রহস্যভেদ করে প্রকৃত সত্যের সন্ধানে। ক্রমাগত আকৃষ্ট হন রহস্য উম্মোচনে তারই ধারাবাহিকতার ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন যাদুশিল্পী শাহীন শাহ্। জানার সুতির্ব্য আগ্রহ আর বুদ্ধিদিপ্ত ভাবনায় নতুনত্ব উপস্থাপনায় চৌকশ, ধ্যান-ধারণা আর মেধা-মননে শাহীন শাহ্ সম্পূর্ণ আধুনিক একজন যাদুশিল্পী। গুনী এই যাদুশিল্পীর গুনী হয়ে উঠার পেছনের কারন অনুসন্ধান করে পাঠকদের মাঝে সেটি তুলে ধরছি। যাদুশিল্পী শাহিন শাহের সাক্ষাতকার নেয়ার সময়ের টুকটাক আলোচনা তুলে ধরা হলো: তার যাদুশিল্পী হয়ে উঠার কাহিনী তুলে ধরে বলেন, জননন্দিত যাদু শিল্পী যাদু সম্রাট জুয়েল আইচের যাদু দেখেই ছোট বেলা থেকে যাদুশিল্পী হওয়ার অদম্য ইচ্ছা শক্তিই আজ তাকে যাদু শিল্পী হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন প্রায় ৪৯ বছর তিনি যাদুশিল্পের সাথে যুক্ত। গুরুকে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন যাদুশিল্পী জুয়েল আইচ ও আনোয়ারুল আনাম। নিজের প্রাপ্তি ও অর্জন সম্পর্কে শাহিন শাহ বলেন তার অর্জন শতভাগ। যাদু প্রদর্শনের ক্ষেত্রে যেমন ভাল অভিজ্ঞতা ও অর্জন রয়েছে তেমনি কিছু খারাপ অভিজ্ঞতাও রয়েছে। ভাল অভিজ্ঞতা তার কাজের সফলতায় উৎসাহ জুগিয়েছে তেমনি খারাপ অভিজ্ঞতা তাকে কষ্টও দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শাহিন শাহ এফএম নিউজকে বলেন, একটি শোতে টাকা তৈরির খেলা দেখাচ্ছিলেন। এমন সমযে এশটি ছোট শিশু জীনৃ-শীর্ণ পোষাক পরা অবস্থায় মঞ্চে উঠে আসে। সে জানায় টাকা তৈরির যাদু শিখতে চায়। কেন শিখতে চায় এমন প্রশ্নের জবাবে শিশুটি তাকে জানায় তারা খুব গরব। তার শুধুমাত্র মা রয়েছে। অভাবের কারণে ঠিকমত খেতে পারে না। মায়ের ঔষধ কিনে দিতে পারে না। তাই যাদু শিখে টাকা তৈরি করতে চায়। সেই টাকা দিয়ে মায়ের ঔষধ কিনে দেবে, চাল-ডাল কিনবে। তাদের আর অভাব থাকবে না। এই ঘটনাটি ভীষণভাবে মনে নাড়া দেয়। যথন মনে পড়ে তখন খুব কষ্ট পান বলে জানান শাহিন শাহ।
যাদু শিল্পী শাহিন শাহের পরিচয় বিশ্ব নন্দিত যাদুকর শাহীন শাহ্ ছোটবেলা থেকে ছিলেন ভীষণ চঞ্চল। একবার যা করবেন বলে তিনি ভাবতেন তা করেই ছাড়তেন। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শাহীন শাহ্ দ্বিতীয়। পিতা মরহুম আব্দুর রব ছিলেন সরকারী চাকুরীজীবী, মা রওশন আরা রব গৃহিণী। শাহীন শাহ্’র শৈশব ও কৈশোরের উজ্জল দিন কেটেছে বরিশাল শহরে। বড় হয়ে একজন সেরা যাদুকর হতে হবে এই ছিল তার স্বপ্ন। শাহীন শাহ্ অত্যন্ত সদালাপী এবং বন্ধুবৎসল। তার স্বাবলীল উপস্থাপনা ও বুদ্ধিদীপ্ত কৌতাকাশ্রেয়ী বাকচাতুর্য্য অনায়েশেই মুগ্ধ করেন দর্শকদের। স্কুল জীবন থেকেই যাদু দেখিয়ে আসছেন তিনি। শাহীন শাহ্ ম্যাজিক আর্টের এক আধুনিক নন্দিত যাদুশিল্পী। স্কুল জীবন থেকে শুরু করে আজ অবদী বংলাদেশের বিভিন্ন চ্যানেলসহ বিশ্বের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ম্যাজিক দেখিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।
বাক পটু উপস্থাপনা ও নান্দনিক ম্যাজিক তাকে এনে দিয়েছে আন্তর্জাতিক পরিচিতি। তাই তো দেশের সীমা রেখা পেরিয়ে আমেরিকা, দুবাই সিংগাপুর, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, কাতার, জার্মান, অষ্ট্রিয়া, ইতালী, চীন ও ভারতসহ পৃথিবীর অনেক দেশ ভ্রমণ করেছেন শুধুমাত্র দর্শকদের অনুরোধে।
যাদু শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য অসংখ্য সংগঠন তাকে সম্মানীত করেছেন। যাদুশিল্পকে তন্ত্র মন্ত্রের বাইরে একটি মডার্ন আট ফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াসে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন চ্যানেলে অসংখ্য শো করে এই তথ্য তুলে ধরছেন। সরাসরি কথা বলেছেন দর্শকদের সাথে। পাশাপাশি যাদু শিল্পের উন্নয়নে তার প্রচেষ্টায় তৈরী হয় যাদুশিল্পী পরিষদ। বর্তমানে তিনি ইয়ূথ ম্যাজিসিয়ান সোসাইটির সম্মানীত প্রধান উপদেষ্টা।
শিশুদের কাছে শাহীন শাহ্ বিস্ময়কর এক নাম। শিশুরা তার যাদুতে এতটাই মোহমুগ্ধ যে কারণে তাকে শিশুবন্ধু বলেও ডাকা হয়। শাহীন শাহ্ যাদু শিল্পকে শুধু নিছক আনন্দের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি এর মাধ্যমে শিক্ষা, অসাম্প্রদায়িক চেতনা, বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব, নারী অধিকার, নারীর উপর অত্যাচার, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, স্বাস্থ্যনীতি, ড্রাগ থেকে মুক্তি আরো কতসব বিচিত্র যাদু তিনি দেখিয়ে চলেছেন। তথাকথিত অলৌকিক শক্তিধর ভন্ডপীর, ফকির, সাধকদের মুখোশ খুলে দেয়াও তার দায়িত্বের একটা অংশ মনে করেন। তাইতো তিনি প্রায়ই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলে থাকেন- কোন ব্যক্তি যদি নিজেকে অলৌকিক শক্তির প্রমাণ করতে পারেন তবে তিনি তাকে এক লক্ষ টাকা পুরষ্কার দিবেন। পারিবারিক জীবনে স্ত্রী লীপি শাহ্ ও একমাত্র কন্যা লী শাহ্কে নিয়ে অনেক সুখী।
পরিশেষে এফএম নিউজ সম্পর্কে নন্দিত এই যাদু শিল্পী বলেন এফএম নিউজ এগিয়ে যাক সত্য, ন্যায়নিষ্ঠতা ও সুন্দর আগামীর পথে। সবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা রাখুক এ কামনা করেন তিনি।
এফএম নিউজ…
আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী…
বিজ্ঞাপন ও বার্তা বিভাগঃ 0183 11-06 108