প্রতিবেদকঃ শেখ হেদায়েতুল্লাহ, খুলনা
খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন তিন দিনের জন্য স্থগিত করার ঘোষনা দেয়া হয়েছে। শনিবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও উপস্থিতি ছিল কম। আমরন কর্মসূচি চলাকালে অনেক শ্রমিক অসুস্থ্য হয়ে পড়ে এবং গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ায় শ্রমিকদের উপস্থিতি কম বলে জানিয়েছে শ্রমিক নেতা ও মিল কর্তৃপক্ষ। ম্যম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী খুলনা- ৩ আসনের ( খালিশপুর ও দৌলতপুর) সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের আহবানে শ্রমিকদের কর্মসূচি আপাতত: স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
এদিকে শনিবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে শ্রমিকদের একাংশ কাজে যোগ দিলেও বেলা ১১টার দিকে তারা কাজ বন।ধ করে আবার অনশন কর্মসূচি শুরু করেছে। শ্রমিক সংগঠনের আভ্যন্তরীন দ্বন্ধে এ অবস।তার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে খুলনা শ্রম অধিদপ্তরে আয়োজিত বৈঠক থেকে এ আহবান জানালে শ্রমিক নেতারা সম্মতি দেন। তারা বলেন, সাধারণ শ্রমিকদের কাছে বৈঠকের এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে এ প্রস্তাব দেয়া হবে। তারা যদি মেনে নেয় তাহলেই কেবল এটি বাস্তবায়ন হতে পারে।
মতবিনিময় সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এই পাটকল এবং শ্রমিকদের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খুলনার বন্ধ হওয়া পাটকলগুলো চালু হয়েছে। এ সরকারের আমলে মজুরি কমিশন ২০১৫ পাশ হয়েছে এবং এ সরকারই তা বাস্তবায়ন করবে। শ্রমিকদের চলমান অনশন ধর্মঘট প্রত্যাহার করার জন্য তিনি শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানান।
শ্রমিকদের স্বার্থে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করবেন। এছাড়া জাতীয় মজুরি কমিশন ২০১৫ বাস্তবায়নে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় আগামী ১৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা এবং বিকেল তিনটায় বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) সভাকক্ষে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বলেন, ১৫ ডিসেম্বরের সভায় দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে আবারো অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে।
ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ নেতা মো: মুরাদ হোসেন জানান, শ্রম প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়। শনিবার কতিপয় শ্রমিক কাজে যোগ দিলেও পরে আবার তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি জানান শ্রমিকরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাজে যোগ দিতে রাজি হচ্ছে না।
জেজেআই (যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রি) প্রকল্প প্রধান মো: শফিকুল ইসলাম জানান, এই মিলের শ্রমিকেরা অধিকাংমই অনশন কর্মসূচিতে যোগ দেয়নি। কিছু সংখ্যক শ্রমিক যোগ দিলেও শনিবার থেকে তারা কাজে যোগ দিয়েছে।
ক্রিসেন্ট জুট মিলের প্রকল্প প্রধান নজরুল ইসলাম খান বলেন, শুক্রবার রাতে শ্রমিক নেতা ও শ্রম প্রতিমন্ত্রী সাথে বৈঠক শেষে শ্রমিকরা তাদের কর্মসূচি স্ঘগিত ঘোষানা করে। সে অনুযায়ী তারা সকালে কাজে আসলে সকাল সোয়া ৭টায় মিল চালু করা হয়। পরে নিজেদের মধ্যে দ্বন্ধের কারনে বেলা ১১ টার দিকে কাজ বন্ধ করে চলে যায়।
বিজেএমসি( বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন) খুলনার আঞ্চলিক লিয়াজো অফিসার মো: বনিজ উদ্দিন মিঞা বলেন, খুলনার ৯টি মিলের শ্রমিকেরা তাদের কর্মসুচি স্ঘগিত করেছে। শনিবার সকালে সব মিলেই কাজ শুরু হয়েছে তিনি বলেন তবে উপস্থিতি ছিল কম। অনেকেই বাড়ি চলে যাওয়া বা শারিরীর অসুস্থ্যতার কারনে মিলে আসতে পারেনি। ধীরে ধীরে উপস্থিতি বাড়বে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা বাস্তবায়ন দাবিতে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরণ অনশন শুরু হয়। এতে প্রায় অর্ধলক্ষ পাটকল শ্রমিক অংশ নেন। অনশনে গত বৃহস্পতিবার অসুস্থ হয়ে আব্দুস সাত্তার নামে জুবিলি জুট মিলের তাঁত বিভাগের একজন শ্রমিকদের মৃত্যু হয়। এছাড়া ২ শতাধিক শ্রমিক অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েন।এফএম নিউজ…
আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী…
বিজ্ঞাপন ও বার্তা বিভাগঃ 0183 11-06 108