খুলনার বন্যপ্রাণী উদ্ধার-পুনর্বাসন সাইনবোর্ড সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান

0
415

প্রতিবেদকঃ শেখ হেদায়েতুল্লাহ, খুলনা

সাইনবোর্ড সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে খুলনার ‘বন্যপপ্রাণী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্র’। সুন্দরবনসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আশ্রয় ও সুচিকিৎসার জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৫ সালে ‘বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠার পর শুরুতে চিকিৎসকসহ কিছু জনবল থাকলেও বর্তমানে নেই ভেটেরিনারিসার্জনসহ অন্যান্য পদে জনবল্ বনবিভাগের অন্য বিভাগের দায়িত্বরতদের দিয়ে চালনো হচ্ছে কেন্দ্রটি।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে খুলনা মহানগরীর এম এ বারী সড়কে (খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সন্নিকটে) প্রায় এক একর জায়গায় বনবিভাগের এ পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। ২০১৫ সালের ১০ অক্টোবর প্রধান বন সংরক্ষক ইউনুস আলী কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন। খুলনার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ কেন্দ্রটির দেখাশোনা করছে।
খুলনা মহানগরীর এমএ বারী সড়কে অবস্থিত বন্যপ্রাণী পুনর্বাসন কেন্দ্রে দেখা গেছে, বাঘের খাঁচায় আশ্রয় মিলেছে তিনটি বানরের। সাতক্ষীরার একটি পার্ক থেকে বানর তিনটি উদ্ধার করে এানে আনা হয়। খুব তাড়াতাড়ি এছাড়া পাখিদের খাঁচায় কোন পাখি নেই। বাঘের খাঁচার কাছে রয়েছে একটি গুইসাপ। অসুস্থ প্রাণীর চিকিৎসার জন্য এখানে রয়েছে আধুনিক সরঞ্জামাদি ও অপারেশন থিয়েটার। আছে প্রয়োজনীয় ঔষুধপত্রও। কিন্তু নেই ভেটেরিনারী সার্জন। পরিদর্শক ও তদারককারী হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন বন কর্মকর্তা লুৎফর পারভেজ।
এ পর্যন্ত অপারেশন থিয়েটারে দুটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রটি পাহারা দেন নৌকা চালক মাহবুব আলম নামে এক ব্যক্তি।
বন্যপ্রাণী পুনর্বাসন কেন্দ্রের ইনচার্জ ও বন্যপ্রাণী পরিদর্শক লুৎফর পারভেজ জানান, এখানে বাঘ, হরিণ, পাখি, বানর, হনুমান ও বিড়াল গোত্রীয় প্রাণীদের জন্য ছয়টি পৃথক কক্ষ (খাঁচা) আছে। কোনো প্রাণী উদ্ধার হলে সরাসরি এখানে নিয়ে আসা হয়। সেই প্রাণী অসুস্থ হলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা, প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার করারও ব্যবস্থা রয়েছে। সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত এখানে রাখা হবে। পুরোপুরি সুস্থ হলে বনে অবমুক্ত করা হবে।
খুলনা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ডিএফও (বিভাগীয় বন কর্মকর্তা) মো: মদিনুল আহসান জানান, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার( খুলনা বিভাগের ১০ জেলা, বরিশালের ৬ জেলা ও বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলা) বেআইনীভাবে পাচারকালে উদ্ধার, চিকিৎসা ও পরিচর্যার জন্য এ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হয়। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত পাখি গ্রোত্রীয় ৪ হাজার ৩৬৮ (টিয়া, শালিক, ময়ুর, পেঁচা, মুনিয়া, ঘুঘু, বাজ, ডাহুক, কালেম, বাজগিরা ইত্যাদি) টি উদ্ধার করা হয়েছে। রেপটাইল গোত্রীয় ৪ হাজার ৭১ (কচ্ছপ, অজগর, গোখরা, শঙখ, তক্ষক ইত্যাদি) টি উদ্ধার করা হয়েছে। ম্যাম্যাল (বিড়াল গোত্রীয়) ৫৮ (হনুমান,বন বিড়াল,মেছো বিড়াল, গন্ধগোকুল, সিংহের বাচ্চা, লেপার্ডের বাচ্চা, জিরাফ ইত্যাদি) উদ্ধার, চিকিৎসা ও পরিচর্যা করা হয়েছে। সকল বন্যপ্রাণীই প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়েছে। গাজীপুর ও কক্সবাজারে সাফারি পাকের বেশ কিছু প্রেরণ করা হয়েছে।

এফএম নিউজ…

আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী…

বিজ্ঞাপন ও বার্তা বিভাগঃ 0183 11-06 108