প্রতিবেদকঃ শেখ হেদায়েতুল্লাহ, খুলনা প্রতিনিধি
রাষ্টায়াত্ব পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন কর্মসূচীর চতুর্থ দিনে প্রায় ২ শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন। এরমধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভতি করা হয়েছে ৯ জনকে। অন্যদেরকে স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে মিলে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে প্রতিদিন উৎপাদন ক্ষতি প্রায় অর্ধকোটি।
মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন, বেসরকারীকরণ রন্ধসহ ১১ দফা দাবিতে রাষ্টায়াত্ব পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদ দ্বিতীয় দফায় রোববার থেকে অনশন কর্মসূচী শুরু করেছে। এর আগে ১০ ডিসেম্বর আমরণ অনশন কর্মসূচী পালন শুরু করে। ১৩ ডিসেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী খুলনা- ৩ (খালিশপুর- দৌলতপুর) আসনের সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে অনশন কর্মসূচী স্থগিত করে। এরপর শ্রমিকদের দাবি নিয়ে ১৫ ডিসেম্বর, ২২ ডিসেম্বর ও ২৬ ডিসেম্বর তিন দফা বৈঠক হয়। ত্রি-পক্ষীয় ওই বৈঠকে কোনো সুফল আসেনি। সর্বশেষ ২৬ ডিসেম্বরের বৈঠকে মজুরী কমিশন বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। এজন্য ২৯ ডিসেম্বর (রোববার) দুপুর থেকে পুনরায় অনশন করার ঘোষণা দেন শ্রমিক নেতারা।
রাষ্টায়াত্ব পাটকল সিবিএ-ননসিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক ও ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিক নেতা মো: মুরাদ হোসেন জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এবার কর্মসূচী স্থগিত অথবা প্রত্যাহার করা হবে না। তিনি জানান বৃহস্পতিবার পরিবার পরিজন নিয়ে আমরণ অনশন কর্মসূচী পালন করা হবে।
প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বলেন, প্রচন্ড শীতে সড়কে আমরণ অনশন কর্মসূচী পালন করতে গিয়ে শ্রমিকরা অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন। প্রায় ২ শয়ের মত শ্রমিককে স্যালাইন দেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রেসার বেড়ে যাওয়া ও ট্রোকজনিত কারনে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ৯জনকে।
এদিকে পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে প্রতিদিন খুলনা জোনের ৯টি পাটকলে উৎপাদন ক্ষতি হচ্ছে ৫০ লাখ টাকা। তাছাড়া মিলগুলোতে পর্যাপ্ত পাট নেই। যে পাট রয়েছে তাতে গড়ে ১০দিন উৎপাদন সচল রাখা সম্ভব বলে মিল সূত্রে জানা গেছে। পাট ক্রয়ের জন্য বিজেএমসি থেকে কোন বরাদ্দও নেই। এমনিতেই মিলগুলো পাট সঙ্কটে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মো: গোলাম রব্বানী বলেন, শ্রমিকদের কর্মসূচীর কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এমনিতেই পাট সঙ্কটের কারণে উৎপাদন ক্ষমতার শতকরা ২৫ ভাগ পাটপন্য উৎপাদন করা যায়। এই মিলে বর্তমানে পাট মজুদ রয়েছে ৫শত টনের মত। যা দিয়ে ১০ দিন মিল চালানো সম্ভব। পাট কেনার জন্য কোন বরাদ্দ নেই। তাছাড়া পাট ব্যবসায়ীদের কাছে মিলটির দেনা ৩২ কোটি টাকা। দেনা পরিশোধ করতে না পারলে পাটও পাওয়া যাবে না।
বিজেএমসি ( বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশন) খুলনার আঞ্চলিক লিয়াজো কর্মকর্তা মো: বনিজ উদ্দীন মিয়া জানান, খুলনা জোনের মিলগুলোর প্রতিদিন যে পরিমাণ উৎপাদন ক্ষমতা তার ২৫ ভাগ পাট পন্য উৎপাদিত হচ্ছে। প্রয়োজনীয় পাট না থাকার কারণে মিলগুলো চালিয়ে নিতে শতকরা ২৫ ভাগের মত পাটপণ্য উৎপাদিত হচ্ছে। তিনি জানান, চলতি মৌসুমে মোট পাটের চাহিদা ৮৩ হাজার ১৮৯ মেট্রিক টন। সেখানে মিলগুলো পাট ক্রয় করেছে ১৯ হাজার মেট্রিক টনের মত। অধিকাংশ মিলেই প্রয়োজনীয় পাট নেই বলে জানান তিনি। শ্রমিকদের কর্মসূচীর কারণে মিলগুলোর উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে ৫০ লাখ টাকার মত।এফএম নিউজ…
আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী…
বিজ্ঞাপন ও বার্তা বিভাগঃ 018-311 06 108