ডুমুরিয়া ভূমি অফিসে দালাল চক্র ৩ বছরের অধিক সক্রিয়

0
369

প্রতিবেদকঃ শেখ হেদায়েতুল্লাহ, খুলনা প্রতিনিধি

ডুমুরিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারী চাকরীতে যে বদলি প্রক্রিয়া রয়েছে সেটি ভুলেই গেছে। বছরের পর বছর একই স্থানে চাকরী করে যাচ্ছেন বহাল তবিয়তে। কেউ কেউ তার চাকরী জীবনের পুরো সময়টাই কাটিয়ে দিচ্ছেন একই কর্মস্থলে। অপরদিকে সা¤প্রতিক সময়ে ভূমি অফিসে দালাল চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা নানা পরিচয়ে জমির নামপত্তন কেস, ভিপি কেস নবায়নসহ অন্যান্য কাজে ব্যস্ত থাকেন সব সময়।
সরকার ভূমি অফিসের কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা আনতে কর্মকর্তা – কর্মচারীদের যাদের মধ্যে তিনবছরের অধিক সময় একই কর্মস্থলে কর্মরত তাদের বদলি শুরু করেছে। কিন্তু ডুমুরিয়া উপজেলা ভূমি অফিসের বেশ কিছু কর্মচারী রয়ে গেছেন তাদের কর্মস্থলে। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে দায়িত্বপালন করায় তারা সেবা গ্রহিতাদের কোন পাত্তা দেন না। অনেক কর্মকর্তার নিজস্ব একটি কর্মীবাহিনী রয়েছে যারা ভূমি অফিসে কাজে আসা ব্যক্তিদের সাথে দেন দরবার করে থাকেন। তাদের খুশি করতে পারলেই দ্রুত কাজ হয়ে যায়। আর খুশি করতে না পারলে মাসের পর মাস ঘুরতে হয়।
বৃহস্পতিবার ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে গিয়ে দেখা যায়, চক আসানখালী মৌজার ৬ শতক জমির নাম পত্তনের একটি কেস নিয়ে প্রায় তিনমাস ঘুরছেন। ইতোমধ্যে তিনি জনৈক ব্যক্তিকে ৩ হাজার টাকা দিয়েছেন। আরও ২ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। বান্দা গ্রামের জনৈক স্কুল শিক্ষিকা একটি নামপত্তন কেসের জন্য ৪ মাস পূর্বে ভূমি অফিসের এক নারী কর্মচারীকে দিয়েছেন। অদ্যাবধি তার কাজটি হয়নি। তিনি ওই নারী কর্মচারীর সাথে কতদিন লাগবে জানতে চাইলে বলেন এই হয়ে যাবে।
এদিকে উপজেলা ভূমি অফিসে দীর্ঘদিন যাবত কর্মরত রয়েছেন সদর তহশিলদার (নায়েব) মো: আমিরুল ইসলাম। তিনি সাড়ে চারবছরের অধিক সদর তহশিলে কর্মরত। তার নিজস্ব একটি কর্মীবাহিনী রয়েছে। যাদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন। অনেক কাজে তিনি সরেজমিন তদন্তে গিয়ে বিপক্ষকে খুজে বের করে তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে অপ্রাসঙ্গিক তথ্য উলে­খ করেন। যা সরকারী সম্পত্তি¡ বেদখল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডুমুরিয়া উপজেলার কুলটি গ্রামের নিতোষ মন্ডল কর্মরত সাড়ে ৪ বছর, অফিস সহায়ক পারভীন, সুফিয়া বেগম তিনবছরের অধিক সময় কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া রুদাঘরা তহশিল অফিসের অফিস সহায়ক সেখানে দায়িত্বপালন না করে সদরে রয়েছেন প্রায় ১৪বছর।
এ বিষয়ে রুদাঘরা তহশিল অফিসের তহশিলদার ফরহাদ হোসেন বলেন, আটমাস আগে এখানে যোগদান করেছি। তার আগে থেকেই অফিস সহায়ক শামিমা খাতুন উপজেলা সদরে দায়িত্বপালন করছেন। তিনি বলেন মৌখিক নির্দেশনায় তিনি সদরে কাজ করছেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সঞ্জিব দাশ বলেন, ভূমি অফিসের প্রয়োজনে কর্মকর্তা- কর্মচারীদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দায়িত্বপঅরন করানো যায়। তিন বছরের বেশি যারা কর্মরত তাদেরকে বদলি শুরু হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন এ বিষয়ে বলেন, সাধারণ জনগণ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হয় ভূমি অফিসে। তাই ভূমি অফিসে কাজের স্বচ্ছতা আনতে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ি কাজ শুরু হয়েছে। যারা তিনবছরের বেশি সময় ধরে একই কর্মস্থলে কর্মরত রয়েছেন তাদেরকে বদলি করা হচ্ছে। ডুমুরিয়ায় তিনবছরের বেশি যারা দায়িত্বরত রয়েছে তাদেরকেও এ প্রক্রিয়ায় বদলি করা হবে। তিনি বলেন জনগণ ভূমি অফিসে নির্বিঘ্নে যাতে কাজ করতে পারে সেব্যাপারে সকল পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।