রাবিতে ছাত্রী ধর্ষণ, আগের দিন রাতেই মহাপরিকল্পনা

0
410

প্রতিবেদকঃ বিপা চৌধুরী, অনিয়ম ও অপরাধ বিভাগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে তার ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়। জানা গেছে ধর্ষণ করে ভিডিও চিত্র ধারণ করবে এমন পরিকল্পনা আগের দিন রাতে করা হয়েছিল। আদালতের জবান বন্দিতে এমন তথ্যই জানিয়েছেন দুই আসামী। গতকাল মঙ্গলবার পুলিশের কাছে এই দোকানের কর্মচারী ছবি দেখে আসামীদেরকে শনাক্ত করেছেন। প্রায় ৫ মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ওই বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র মাহফুজুর রহমান।

জানা গেছে মেয়েটির পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করার জন্যই ঘটনার আগের দিন রাতে ৫ বন্ধু মিলে একটি চায়ের দোকানে বসে ধর্ষণের পরিকল্পনা করেন। এ ঘটনায় করা মামলায় ৬ আসামীর মধ্যে এজাহারভুক্ত আসামী বিশালকে পুলিশ এখনো ধরতে পারেনি। তবে মূল আসামী মাহফুজুর রহমানের ২ দিনের রিমান্ড গতকাল শেষ হয়েছে। আজ বুধবার তাকে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। অন্যদিকে, আসামী প্লাবন তালুকদার এবং রাফসানকে জেল গেটে জিজ্ঞাসা বাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গত রোববার বিকালে ২ আসামী জীবন ও জয়কে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দী নেওয়া হয়। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। অন্য আসামীদের ভেতর প্লাবন তালুকদার (২১) এবং রাফসান (২১) বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। জয় জীবন এবং বিশাল স্থানীয় তরুণ। এই মামলাটি তদন্ত করছেন রাজশাহী নগরের মতিহার থানার উপপরিদরসক আব্দুর রহমান। আদালতে জবান বন্দীর বরাত দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ঘটনার আগের দিন নগরের তালাইমারির মোড়ের একটি চায়ের দোকানে বসে পরিকল্পনা করেন মাহাফুজুর রহমান, তারেক মাহামুদ অরফে (জয়), জীবন, রাফসান এবং প্লাবন তালুকদার। পরে এই পরিকল্পনার সাথে যুক্ত করা হয় বিশালকে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৪ জানুয়ারি রাত সারে ৮ টার দিকে মাহাফুজুর রহমান ঐ ছাত্রীকে প্লাবন তালুকদারের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান।

কিছুক্ষণ পর প্লাবন তাদের দু’জনকে গল্প করতে বলে বাইরে বের হয়ে যান। আর এই ফাঁকে মাহাফুজুর রহমান তাকে ধর্ষণ করেন। রাত ৯ টার দিকে প্লাবন কিছু একটা নেবার নাম করে ফিরে আসেন। তিনি বেরিয়ে যাবার ১০-১৫ মিনিটের ভেতর তারেক, জীবন এবং বিশাল ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে গ্রীলের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন। সাজানো নাটক অনুযায়ী বিয়ে না করে অসামাজিক কাজ করার অভিযোগ এনে তাদের মা-বাবাকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেবার ভয় দেখানো হয়। মেয়েটি যেন থানায় মামলা না করতে পারে এজন্য তাদের শারীরিক সর্ম্পক স্থাপনে বাধ্য করা হয়। আর তার ভিডিও ধারণ করা হয়।

২৬ জানুয়ারি দুপুরের ভেতর ৫০ হাজার টাকা না দিতে পারলে ভিডিও এবং ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তারেক, জীবন এবং বিশাল। উপায় না পেয়ে মেয়েটি তার পরিবারকে পুরো বিষয় খুলে বলেন। ২৭ জানুয়ারি মা-বাবাসহ নগরের থানায় গিয়ে মামলা করে মেয়েটি। পুলিশ রাতে মাহাফুজুর রহমান, প্লাবন তালুকদার এবং রাফসানকে গ্রেফতার করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয় তারেক এবং জীবনকে।

মতিহার থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, অজ্ঞাতনামা আসামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ তার কাছ থেকে ভিডিও চিত্র উদ্ধার করে। তবে, এই ঘটনার সাথে জড়িত ছয়জন আসামীর ভেতর আসামী বিশালকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার জন্য সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

এফএম নিউজ…

আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী…

বিজ্ঞাপন ও বার্তা বিভাগঃ 018-311 06 108