করোনা কপোকাত ম্যালেরিয়ার ঔষধেঃ সুস্থ আমেরিকার একজন

0
847

প্রতিবেদকঃ আছিফ রহমান শাহীন, স্বাস্থ্য চিকিৎসা বিভাগ
যদিও অসাধ্য সাধনের মতই একটি সুখবর বিশ্ববাসীর এই ক্রান্তিলগ্নে আশার আলো জ্বালালো। তারপরেও বলবো, আমাদের সতর্কতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই। সমগ্র মানব জাতির যখন একটি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আশংকাজনকভাবে সারা পৃথিবী জুড়ে মহামারীর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সে ভাইরাস কপোকাত অনেক আগের আবিস্কৃত ম্যালেরিয়ার ঔষধে।
যা ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর ফেইসবুক পেইজ এ দিয়েছেন। যা নিম্নে তুলে ধরা হল-

“আগামীকাল থেকে নিউইয়র্কসহ অন্যান্য জায়গায় করোনা রোগের চিকিৎসার ঔষধ অফিসিয়ালি চালু হচ্ছে”- প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণা।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একেবারে মুমুর্ষু অবস্থা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা-একজন রোগীর বিশদ বর্ণনা-
রিও জিয়ারডিনেইরা, বয়স ৫২। ফ্লোরিডার অধিবাসী। একটা কুকিং যন্ত্রপাতি ম্যানুফাকচার কোম্পানীর ভাইস প্রেসিডেন্ট। করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে ছিলেন ।

নিউ ইয়র্কের এক কনফারেন্স থেকে সম্ভবত তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এর পর থেকেই প্রচন্চ ব্যথা, কফ এবং জ্বরে ভুগতে থাকেন। অবস্থা খারাপ হতে থাকলে সাউথ ফ্লোরিডার জএ ডিয়ামাজ্ঞিও চিল্ড্রেন হসপিটাল (Joe DiMaggio Children’s Hospital) এর আইসিইউতে অক্সিজেনে রাখা হয়।
একসপ্তাহ এভাবে থাকার পর ডাক্তাররা বলেন- ওদের আর করার কিছুই নেই। একথা শুনার পর শুক্রবার বিকেলে মিঃ রিও নিজ স্ত্রী এবং তিন সন্তানদের মনে মনে চুড়ান্ত বিদায় জানান।
ঐ দিন আমার শ্বাসকষ্ট এতোই বেড়ে গিয়েছিলো আমি বলতে গেলে আর শ্বাসই নিতে পারছিলাম না। কথা বলা দূরের কথা। বুঝতে পারছিলাম- জীবনের শেষ ক্ষণ খুব দ্রুতই ফুরিয়ে আসছে।

ঠিক ঐ সময় এক বন্ধুর পাঠানো একটা আর্টিকেল থেকে ডাক্তাররা সম্পর্কে জানতে পারেন- যা বিগত দশক থেকে ম্যালেরিয়া রোগ নিরাময়ে হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইন ( Hydroxychloroquine)
উপযোগী ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর সাথে ছিলো ক্লোরোকুইন ( chloroquine) নামক আরেকটি ড্রাগ। যদিও বা এটা কোভিড ১৯ রোগের চিকিৎসার জন্য হেল্থ অফিসিয়াল কর্তৃক অনুমোদিত নয়।

অনুমোদিত না থাকার কারণে- ডাক্তাররা প্রথমে মিঃ রিওকে এই ড্রাগটি দিতে চাননি। কিন্তু রিও বলেন- আমার যখন চিকিৎসার কোনো ঔষধই নাই এবং আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা এই অবস্থা থেকে আমি আর বেঁচে আসবো কিনা। তাই শেষ চিকিৎসা হিসাবে কেন আমাকে আপনারা এই ঔষধটি দিচ্ছেন না এই কথাগুলো বলতে আমার খুব কষ্টই হচ্ছিলো।
এটা বলার ত্রিশ মিনিট পর নার্স এসে আমাকে এই ঔষধটি খাইয়ে যান। প্রায় আধ ঘন্টার পর মনে হলো আমার হার্টবিট প্রচন্ড বেড়ে গেছে , প্রায় দুই ঘন্টা পর মনে হলো আমি আর শ্বাসপ্রশ্বাস যে টুকু নিতে পারছিলাম এখন আর তাও পারছিনা।

এরপর আমাকে বেনাড্রাইল (Benadryl)
দেয়া হলে আমি ঘুমিয়ে পড়ি এবং পরদিন ভোর চারটা ৪৫ মিনিটে ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর মনে হলো- আমি এক সম্পূর্ণ নতুন মানুষ। আমার যেন কোনো কিছুই হয়নি। এরপর থেকে আমার কোনো জ্বর নেই,ব্যথা নেই, এমনকি কোনো শ্বাসকষ্টও আর নেই।
ডাক্তারদের মত- প্রথম ডোজ দেয়ার পর আমার শরীরে যা হয়েছিলো তা ঔষধের কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া না। বরং বরং এটা ছিলো ভাইরাসকে পরাজিত করে আমার শরীরের সুস্থ হয়ে যাওয়ার যুদ্ধ।
শনিবারে আমাকে আরো তিন ডোজ ঔষধ দেয়া হয়। আমি যে আরেকটি ভোর পৃথিবীতে দেখতে পাবো- আজকের সকাল পর্যন্ত এই বিশ্বাস আমার ছিলোনা। এখন আমি খুব সুস্থ বোধ করছি এবং আশা করছি খুব শীঘ্রই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে আমি আমার প্রিয়জনদের কাছে আবার ফিরে যাবো।

আগামী কাল থেকে নিউইয়র্ক সহ অন্যান্য জায়গায় অফিসিয়ালি এই ড্রাগ করোনা ভাইরাসের ট্রিটমেন্ট হিসাবে ব্যবহার করার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষনা দিয়েছেন।

(মূল খবরের লিংকটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফেজবুক পেজ থেকে নেয়া এবং পত্রিকার পুরো ইংরেজি আর্টিকেলটি কমেন্ট রেফারেন্স হিসাবে দেয়া হলো)।
https://nypost.com/2020/03/22/florida-man-with-coronavirus-says-drug-touted-by-trump-saved-his-life/
লেখাটি সংগ্রহ করেছেন-মোঃআছিফুর রহমান শাহীন (গভারমেন্ট রেজিস্টার্ড এ গ্রেড ফার্মাসিষ্ট) বি.ফার্ম,এম.ফার্ম।

এফএম নিউজ

আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী

বিজ্ঞাপন বার্তা বিভাগঃ 018-311 06 108