প্রতিবেদকঃ আছিফ রহমান শাহীন
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিভাগ
কখনো বা মাইক হাতে রাস্তায় জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজ করছেন নতুবা নিজেই রাস্তায় পরিস্কার করছেন বা করোনা মোকাবিলায় নগরের রাস্তায় জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছেন মেয়র নাছির। করোনাভাইরাস আতঙ্কে চট্টগ্রামে কমেছে জন চলাচল। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় দৌঁড়ঝাপ কমে গেছে নির্বাচনে অংশ নেয়া রাজনীতিবিদ আর তাদের অনুসারীদেরও।
তবে মনোনয়ন বঞ্চিত নগরপিতা ঠিকই শহরজুড়ে ছুটছেন নগরবাসীকে বাঁচাতে। যেখানে নগরের চার সাংসদ ও মন্ত্রীরা নীরব ভূমিকায় সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, সেখানে প্রতিদিন নগরবাসীকে সচেতন ও সহায়তা করতে নগরজুড়ে চষে বেড়াচ্ছে তিনি। নাগরিকদের পৌঁছে দিয়েছেন মাস্ক বা জীবাণুনাশক। মাইকিং করে বৃদ্ধি করছেন জনসচেতনতা। সিটি কর্পোরেশন আর দলের কর্মীদের নিয়ে ছুটছেন পথ থেকে পথে শহরকে জীবাণুমুক্ত করতে। চট্টগ্রামের প্রতি নাড়ির টান আর নগরপিতার দায়িত্বজ্ঞান তাকে মৃত্যুভয়ে গৃহবন্দি করতে পারেনি।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) স্থগিত হয়ে যাওয়া নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি আ জ ম নাছির উদ্দিন। কিন্তু এ অপ্রাপ্তি গণবিচ্ছিন্ন করতে পারেনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মাঠ কাঁপানো ছাত্রনেতা থেকে নগরপিতা হয়ে ওঠা নাছিরকে। যে রাজপথ একসময় স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল করছিলেন সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে, সে রাজপথেই তিনি আবারও ফিরেছেন নতুন লড়াইয়ে।
এবার লক্ষ্য নগরবাসীকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাবা থেকে বাঁচানো। করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধির প্রভাবে ২১ মার্চ স্থগিত হয়ে যায় চসিক নির্বাচন। যাকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া রেজাউল করিম এবং বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন।
বাসায় বাসায় এস্প্রে করছে পরিচ্ছন্নকর্মী। মনোনয়ন ঘোষণার পরে রেজাউল, শাহাদাতসহ কমিশনার পদপ্রার্থীরা দিনরাত নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটালেও নির্বাচন স্থগিত হওয়ার খবরে স্তিমিত হয়ে পড়েছে নির্বাচনকেন্দ্রীক প্রচার-প্রচারণার কার্যক্রম। করোনাভীতিতে মাঠ ছাড়া রাজনীতিবিদদের ভিড়ে চট্টগ্রামে আত্মদানের লড়াইয়ে ব্যতিক্রমী উজ্জল আ জ ম নাছির।
করোনা ইস্যুতে মেয়র নাছির উদ্দিনের উদ্যোগে ১৯ মার্চ চট্টগ্রামের সকল স্থানীয় পত্রিকায় জনসচেতনতার সৃষ্টির লক্ষ্যে গণবিজ্ঞপ্তি দেয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। পরেরদিন নাগরিকদের মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনার আহ্বান জানান তিনি। আবার একই বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনার আলোকে সরকারের দেওয়া নির্দেশনাগুলো মেনে চলার আহ্বানও জানান তিনি। ২১ মার্চ নগরীর বিভিন্ন মোড়ে হাত ধোঁয়ার জন্য সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন মেয়র।
দুদিন পরে ২৩ মার্চ জনসমাগম এড়িয়ে চলতে নাগরিকদের সচেতন করতে মাইক হাতে রাস্তায় নামেন তিনি। ওইদিন নগরের লালখান বাজার, ওয়াসা মোড়, জিইসি মোড়, ২ নম্বর গেইট, ষোলশহর রেল স্টেশন, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, চকবাজার, জামালখান, কাজীর দেউড়ি, আন্দরকিল্লা, বকসির হাটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ঘুরে ঘুরে মাইকিংয়ের মাধ্যমে এ প্রচারণা চালান। নগরবাসীর বাসায় এস্প্রে করা হয়।
মেয়রের উদ্যোগেই ২৪ মার্চ থেকে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ৩ হাজার ২শ পরিচ্ছন্ন কর্মী একনাগারে বাড়ির আশপাশে জীবাণুনাশক ছিটায় এবং এই কার্মসূচি চলমান থাকবে। তাছাড়া ২৫ মার্চ থেকে নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে দৈনিক ৪২ হাজার লিটার করে জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। শুরুর থেকে মেয়র নিজে উপস্থিত হয়ে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এমনকি নগরবাসীকে সচেতন করতে নিজেই পাইপ হাতে রাস্তায় হেঁটে হেঁটে জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছেন। তাছাড়া একমাত্র চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনই নিজেদের হাসপাতালে কোয়ারাইন্টানের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া করোনা আক্রান্ত রোগীর সমস্ত ব্যয়ভার সিটি করপোরেশন বহন করার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র নাছির।
এই বিষয়ে জানতে কথা হয় নগরপিতা আ জ ম নাছিরের সাথে। তিনি বলেন, নগরবাসীকে ঝুঁকিতে রেখে আমি নিরাপদে থাকবো, তা হতে পারে না। তাই প্রতিটি দিন কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। মানুষ যাতে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হয়, সেই বার্তায় দিয়ে আসছি। তথ্য সূত্রঃ পূর্বপশ্চিম বিডি
এফএম নিউজ…
আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী…
বিজ্ঞাপন+বার্তা বিভাগঃ 01831106108