সম্মানীত বাড়িওয়ালা, আপনার নিকট মধ্যবিত্তের একটি বিশেষ নিবেদন

0
931

প্রতিবেদকঃ শামীমা আফরোজ

জাতীয় বিভাগ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে সাধারণ ছুটি চলছে। সাধারণ ছুটির সময় রাস্তাঘাট এখন পুরোই ফাঁকা। করোনা সংক্রমণ এড়াতে সবাই যার যার ঘরে অবস্থান করছেন। এমতাবস্থায় কাজ করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষ।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে পুরো বাড়িভাড়া দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ এখন সবকিছু বন্ধ। সবাই এক প্রকার বেকার জীবন কাটাচ্ছে। কঠিন দুঃসময় পার করছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মধ্যবিত্তরা। কিছু ক্ষেত্রে দু–একজন বাড়িওয়ালা ভাড়া মওকুফ করেছেন এই মহামারির সময়। তাঁরা ভাড়াটিয়াদের পাশে এসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে এই কাতারে সব বাড়ির মালিক এসেগেলে বিষয়টি বন্ধুর হতো।

এমতাবস্থায় চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সন্তানের বাবার চোখে হতাশা। তাদের হতাশা একটাই, মাস শেষে বাড়ি ভাড়া কোত্থেকে আসবে? যেখানে অফিস-আদালত বন্ধ সেখানে টাকা আসার আর উপায় কই!  মাস শেষে তাদের নির্ধারিত বেতনও নেই। তাঁদের ভরসা প্রতিদিনের কাজের ওপর।

কিন্তু বাড়িওয়ালারা মহানুভবতার পরিচয় দিয়ে দু–এক মাসের ভাড়া না নিয়ে যদি শুধু যাবতীয় বিল পরিশোধের খরচ নিতেন, তাহলে পরিস্থিতিটা আপাতত সামাল দেয়া যেত। এতে তাঁরা (বাড়ি/ফ্ল্যাটের মালিক) খুব বেশি বিপদে পড়ারও কথা নয়। কিন্তু এটা না হলে মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত ভাড়াটিয়াদের খুব সমস্যায় পড়তে হবে।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের জন্য। এটা অবশ্যই ভালো দিক। এতে অর্থনীতির চাকা স্থবির হয়ে পড়বে না। সচল থাকবে নিম্নবিত্ত শ্রমিকের পরিবার। তাদের না খেয়ে থাকার অনিশ্চয়তা কেটে যাবে এই প্রণোদনা প্যাকেজের মাধ্যমে।

কিন্তু শুধু রপ্তানিমুখী শ্রমিকেরাই দেশের চালিকাশক্তি নন। সব শ্রমিক, মধ্যবিত্ত, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী এবং স্বাধীন পেশাজীবীরাও দেশের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিমধ্যে দেখা যাচ্ছে, নিম্ন আয়ের মানুষদের খাবার এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিতরণ করছেন অনেকেই। এমন দুর্যোগের দিনে মানবতার স্বার্থে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে নানান দিক হতে আহবান জানানো হচ্ছে।

যত আপদ এই মধ্যবিত্তে। মধ্যবিত্তদের বড় সমস্যা হচ্ছে তারা কারও কাছ থেকে কিছু নিতে পারে না লোক লজ্জায় যদিও ঘরে খাবার নাই। ঠিক তখন বাড়িভাড়াটা যেনমরার উপর খরার ঘা।

বিষয়টি বাড়িওয়ালা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দেখতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে সরকারি নির্দেশনাও দেওয়া যেতে পারে। সরকার প্রয়োজনে বাড়িওয়ালাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পরবর্তীতে এই দু/এক মাসের ভাড়া সমন্বয়ও করে দিতে পারেন। মেগা প্রজেক্টগুলোতে যে ব্যয় হয়, তার একটা প্রজেক্টের টাকাও ব্যয় হবে না এই মানবিক উদ্যোগে।

মার্চের মাঝামাঝি হতে মহামারি শুরু এখন এপ্রিলও চলে এসেছে। কারো কারো মার্চ এপ্রিল দুই মাসের দেনা এখন মাথায়। তাই করোনাভাইরাসের প্রকোপ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো যেন বাড়িভাড়া থেকে মুক্তি পায় এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট ঘোষণা এবং নির্দেশনা কামনা পুরো মধ্যবিত্তবাসীর।

তবে সব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আশায় বসে না থেকে দুর্যোগের সময় বাড়িওয়ালারা যার যার অবস্থান থেকে মানবতার দিক বিবেচনা করে এ বিষয়ে এগিয়ে আসবেন বলে আশা ব্যক্ত করছেন ভুক্তভোগী সবাই। “মানুষ মানুষের জন্য” এ বিষয়টি এখন বিবেচনার উপযুক্ত সময়।

এফএম নিউজ

আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী

বিজ্ঞাপন+বার্তা বিভাগঃ 01831106108