ঢিলেঢালা লকডাউনঃ পণ্যবাহী গাড়িতে আসছে লোকজন; আতঙ্কে স্থানীয়রা

0
358

প্রতিবেদকঃ এইচ এম রফিকুল ইসলাম (ভিপি কামাল)

শ্রীমঙ্গল থানা প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের সাতটি উপজেলায় এখন লকডাউন চলছে ঢিলেঢালা। এ অবস্থায় প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে ফাঁকি দিয়ে প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত জেলা থেকে কোনো না কোনো মানুষ এ জেলায় ঢুকে পড়ছে। এতে জেলা জুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পণ্যবাহি গাড়িতে অন্য এলাকার লোকজন অবাধে প্রবেশ করছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ রয়েছে। পণ্যবাহি গাড়ি চলাচলে বিশেষ ছাড় থাকায় সুযোগটা নিচ্ছে ঢাকা, নরসিন্দি ও নারায়ণগঞ্জের আক্রান্ত এলাকার লোকজন।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রামন ঝুঁকি মোকাবেলায় গত ১৩ এপ্রিল মৌলভীবাজার জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট নাজিয়া শিরিন। সেই সাথে লকডাউন চলাকালে এ জেলায় জনসাধারণের প্রবেশ ও প্রস্থান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। জেলার ভিতরে আন্তঃ উপজেলা চলাচলেও একইরূপ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। বন্ধ রাখা হয় সকল ধরনের গণপরিবহন ও জমায়েত। কেবল জরুরি পরিষেবা, চিকিৎসা সেবা, কৃষিজাত পণ্য, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ ও সংগ্রহ এ আদেশের আওতার বহির্ভূত ছিল।

গত এক সপ্তাহ ধরে প্রশাসনের কিছুটা শিথিলতায় লকডাউন না মেনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা ও উপজেলা শহরে এমন কি ইউনিয়নের হাটবাজারে মানুষের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। কারণে অকারণে শহরের রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ছেন লোকজন। কিছু কিছু ব্যবসায়ী প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নানা অজুহাতে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব না মেনে কেটাকাটা করা হচ্ছে।

শহরে বেড়েছে রিকশা, গাড়ি, মোটরসাইকেল, টমটম ও সিএনজি চালিত আটোরিকশা চলাচল। কোন নিরাপত্তা বিধি না মেনেই অন্য জেলা থেকে পণ্য নিয়ে বিভিন্ন শহরে প্রবেশ করছে ট্রাক, লড়ি, পিকআপ ভ্যান। এ গাড়িতে করে আসছেন লোকজন। এছাড়া শহরে চলাচলকারী গাড়িতেও সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। এতে করে যেমন করোনার ঝুঁকি বাড়ছে তেমনি বাড়ছে কমিউনিটি ট্রান্সামিশন।

গত ২২ এপ্রিল ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের ফুলছড়া চা বাগানে আসা এক কলেজ ছাত্রীর শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এর আগে ঢাকা থেকে আসা শহরের এক ব্যাংক কর্মকর্তার শরীরেও করোনাভাইরাসনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। কুলাউড়া উপজেলাতে ৩ পুলিশ সদস্যসহ ৬ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। কমলগঞ্জ, রাজনগর, বড়লেখা ও জেলা সদরেও করোনা শনাক্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন, সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা প্রতিদিন শহরে মাইকিং করে, টহল দিয়ে, জনগণকে সচেতন করতে পারছেনা। বিভিন্ন অপরাধে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা করেও মানুষের অযথা ঘোড়াফেরা বন্ধ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন,‘মানুষ নিজে থেকে সচেতন না হলে, তাদের মধ্যে মৃত্যু ভয় না থাকলে আমরা কি করতে পারি।’ কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী এফএম নিউজকে বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা লোকজনকে বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করছি, ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করেও তাদের মধ্যে সচেতনতা আনতে পারছিনা।’ মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন বলেন, ‘মানুষের মধ্যে লকডাউন না মানার প্রবণতা আমারও দেখছি। মানুষকে ঘরে রাখতে টহল জোড়দার করতে ও চেকপোস্ট গুলোতে আরও কড়াকড়ি বাড়াতে আমরা চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি।’

এফএম নিউজ

আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী

বিজ্ঞাপন+বার্তা বিভাগঃ01831106108