প্রতিবেদকঃ নিশাত বিথি
আর্ন্তজাতিক বিভাগ
প্রায় ২০ লাখ মানুষের একটি জনগোষ্ঠি ১৩ বছর ধরে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ, করোনার এই কালে যেটাকে আমরা বলছি লকডাউন। সামান্য কয়েক দিনের লকডাউনে আমরা যারা ভীষণ হাঁপিয়ে উঠেছি, তাদের জন্য এমন তথ্য অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এমন নরকতুল্য অবরুদ্ধ জীবনযাপন করে আসছেন ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের মানুষ। মরার ওপর খাড়ার ঘা’য়ের মতো তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস।
দখলদার ইসরাইলের কারণে বলতে গেলে গোটা ফিলিস্তিনই অবরুদ্ধ। তবে পশ্চিম তীরে কিছু সুযোগ-সুবিধা থাকলেও গাজার অবস্থা যাচ্ছেতাই। বিশেষ করে ২০০৭ সালে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক দল হামাস যখন গাজা পরিচালনার দায়িত্ব নেয়, তখন থেকেই ইসরাইলের বোমার নিচে এই ২০ লাখ মানুষের বসবাস। দেশটির বহুমুখী অবরোধের কারণে সেখানে একটি সুঁইও ঢুকতে পারে না। ২০০৭ সাল থেকেই গাজার স্থল সীমান্ত সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। বন্ধ আছে আকাশ ও সমুদ্রসীমাও। পণ্যের আমদানি-রফতানি তো বটেই, গাজাবাসীর যাতায়াতও বন্ধ হয়ে আছে এতগুলো বছর।
ভয়াবহ দারিদ্র্যের কারণে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হওয়া এই ভূখণ্ডে এখন পর্যন্ত ১৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পুরো ফিলিস্তিনে এই সংখ্যা ৩৬০ জন, মৃত্যু ২ জনের। গাজার ৮০ শতাংশ মানুষই থাকে শরনার্থী শিবিরে। বলতে তাদের কোনো কাজ বা উপার্জন নেই। বহির্বিশ্বের যৎসামান্য সাহায্য-সহযোগিতায় জীবন নির্বাহ করে তারা। ন্যূনতম নাগরিক সুবিধা নেই, এমনকি পানি ও বিদ্যুৎ ছাড়াই দিনের পর দিন কেটে যায় তাদের।
ওদিকে করোনার এই সময় সাহায্য-সহযোগিতাও কমে কেমে এসেছে অনেকখানি। এক সঙ্কটের পর নতুন করে করোনা ছড়িয়ে পড়ায় গাজার চিকিৎসকরা ভীষণ উদ্বিগ্ন। তারা বলেন, বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে করোনায় আক্রান্ত হলেও নানারকম চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় কিন্তু গাজায় সেটা কল্পনাও করা যায় না। গাদাগাদি করে থাকা শরনার্থী শিবিরে সামাজিক দূরত্ব মানা রীতিমতো বিলাসীতা। হাতে গোনা কয়েকটি হাসপাতাল থাকলেও সেগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা নেই বললেই চলে, নেই কোনো চিকিৎসা সরঞ্জামও।
এফএম নিউজ…
আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী…
বিজ্ঞাপন+বার্তা বিভাগঃ01831106108