প্রতিবেদকঃ মোঃ এমরান হোসেন মজুমদার
ফেনী জেলা প্রতিনিধি
ফেনীতে একদিনেই লাফিয়ে দ্বিগুন ছাড়িয়ে গেল করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগির সংখ্যা। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, গত ১৬ এপ্রিল ঢাকা ফেরত এক যুবক আক্রান্তের মধ্য দিয়ে জেলায় প্রথম করোনা রোগি শনাক্ত হয়। এর ক’দিন পরই সোনাগাজীতে আক্রান্ত হন স্থানীয় একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ল্যাব টেকনেশিয়ান। তাদের দুইজনকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল ট্রমা সেন্টারে আইসোলেশনে আনা হয়। গত বুধবার দুইজনকেই বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের সংস্পর্শে আসা পরিবারের সদস্য ও স্বজন কারোই করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি।
গত ২১ এপ্রিল দাগনভূঞা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা পর্যায়ের এক সরকারি কর্মকর্তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ২৯ এপ্রিল রাতে তার নমুনা প্রতিবেদনে পজেটিভ হয়। একইদিন ঢাকা ফেরত দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের উত্তর আলামপুর গ্রামের এক নারীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। তার স্বামী ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন। গত ২ মে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ১৩ বছর বয়সের এক কিশোরী ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার বাড়ি মিরসরাই উপজেলায়। ৪ মে নমুনা সংগ্রহ করা হলে ৬ মে বুধবার দুপুরে তার শরীরে করোনা ভাইরাস পজেটিভ আসে। তাকে আশংকাজনক অবস্থায় ওইদিন সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে ১৭ বছরের কিশোরী আক্রান্ত হয়। গত ২৯ এপ্রিল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলে নমুনা সংগ্রহ করা হলে বুধবার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। গত ৩ মে দাগনভূঞায় এক নারী জনপ্রতিনিধির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বুধবার রাতে নমুনা রিপোর্ট পজেটিভ আসে। ওই নারী জনপ্রতিনিধি করোনা আক্রান্ত সরকারি কর্মকর্তার সংস্পর্শে এসেছিলেন মনে করেই সংক্রমনের আশংকায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এনিয়ে জেলায় গত ২০ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ জন। সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ জন।
সূত্র আরো জানায়, ১ এপ্রিল সদর উপজেলার ছনুয়ায় উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া এক যুবকের নমুনা সংগ্রহের মধ্য দিয়ে সংগ্রহ শুরু হয়। ৩ এপ্রিল তার নমুনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। জেলায় গতকাল রবিবার ৫১ জনসহ গত ৪১ দিনে এ পর্যন্ত ৬শ ৬৬ জনের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ৪শ ১১ জনের নমুনা প্রতিবেদন আসে।
এদিকে জেলায় দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বেড়ে চলেছে। জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আরও অনেক সচেতন হতে হবে। দোকানপাট খুললেও সামাজিক দূরত্ব বজায় থেকে কেনাকাটা করতে হবে। বাজারে চলাচল করতে গেলেও নিয়ম মানতে হবে। তা না হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা রয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরীন সুলতানা সুলতানা জানান, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রতিদিন সকাল-বিবাল প্রশাসনের দুটি টিম কাজ করছে। তারা বাজার মনিটরিংও করছেন। কোন ধরনের অভিযোগ পেলে সেখানেই তারা ছুটে যাচ্ছেন। জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বলেন, একদিনে দুইজন আক্রান্ত এটা অবশ্যই আশংকার বিষয়। এ ব্যাপারে জনসাধারনকেও সচেতন হতে হবে। সরকারের স্বাস্থ্য বিধি অনুযায়ী সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত বরতে প্রশাসন সার্বক্ষনিক কাজ করছে। তথ্যসূত্রঃ ফেনীর সময়।
এফএম নিউজ…
আপনার এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গী…
বিজ্ঞাপন+বার্তা বিভাগঃ01831106108